أحمد محمد لبن Ahmad.M.Lbn مؤسس ومدير المنتدى
عدد المساهمات : 52644 العمر : 72
| موضوع: শাবানমাসেরশেষার্ধেসাওম পালনেরবিধান (Bengali) السبت 21 أبريل 2018, 12:40 am | |
| শাবানমাসেরশেষার্ধেসাওম পালনেরবিধান (Bengali) জাকেরুল্লাহআবুলখায়ের সম্পাদক:ড. আবুবকরমুহাম্মাদযাকারিয়া
শাবানমাসেরশেষার্ধেসাওমপালনেরবিধান প্রশ্ন: শাবান মাসের পনের তারিখের পর নফল সাওম পালনের বিধান কী?আমি শুনেছি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবানের পনের তারিখ অতিবাহিত হওয়ার পর নফল সাওমথেকে নিষেধ করেছেন।
উত্তর: আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুথেকে বর্ণিত, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন শাবান মাসের অর্ধেক অতিবাহিত হয় তখন তোমরা সাওম রেখোনা”। (আবু দাউদ হাদীস নং ৩২৩৭;তিরমিযীহাদীস নং ৭৩৮;ইবন মাজাহ হাদীস নং ১৬৫১। আল্লামা আলবানী রহ. সহীহ তিরমিযী নামক কিতাবে হাদীসটিকে সহীহ বলে আখ্যায়িত করেছেন।পৃ: ৫৯০)
হাদীসটি দ্বারা সুপষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, শাবানের পনের দিন অতিবাহিত হওয়ার পর ১৬ তারিখ থেকে সাওম পালন করানিষিদ্ধ, তবে এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, এ বিষয়ে বিপরীতমূখী হাদীসও বিদ্ধমান আছে, যেগুলো সাওম রাখা জায়েয হওয়াকে প্রমাণ করে।যেমন, সহীহবুখারী, হাদীস নং ১৯১৪;সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৮২-তে বর্ণনা করেন।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুথেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেন, তোমরা রমযানের একদিন বা দুইদিন পূর্ব থেকে সাওম রাখা আরম্ভ করে রমযান মাসকে এগিয়ে এনো না। তবে কারো পূর্ব থেকেই ঐ দিনে সাওম রাখার অভ্যাস থাকলে তার বিষয়টি ব্যতিক্রম, তার জন্য সাওম রাখাই উচিত, সে যেন সাওম রাখে।
হাদীসটি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, অর্ধ শাবানের পর সাওম রাখতে অভ্যস্ত এমন ব্যক্তির জন্য সাওম রাখা জায়েয আছে। যেমন, কোনো ব্যক্তির অভ্যাস হলো প্রতি সোমবার অথবা বৃহস্পতিবারে সাওম রাখা। ঘটনাক্রমে শাবানের ২৯ তারিখ সোমবার অথবা বৃহস্পতিবার, তখন তার জন্য তার অভ্যাসানুযায়ি সেদিন নফল সাওম রাখাতে কোনো অসুবিধা নেই অথবা কোনো ব্যক্তি একদিন পরপর সাওম রাখতো তার জন্যও সাওম রাখাতে কোনো অসুবিধা নেই।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকেবর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ণ শাবান মাস সাওম পালন করতেন। তিনি শাবান মাসে সাওম পালন করতেন, খুব কম সংখ্যক দিনই সাওম থেকে বিরত থাকতেন”। (সহীহবুখারী, হাদীস নং ৯৭০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৫৬)
ইমাম নাওয়াবী বলেন,এ বাক্যটি প্রথম বাক্যের ব্যাখ্যাস্বরূপপুরো শাবান মাস সাওম রাখতেন -এ কথা দ্বারা অধিকাংশ সময় সাওম রাখতেন বলাই উদ্দেশ্য। অন্যথায় তিনি একেবারে ধারাবাহিকভাবে পূর্ণ মাস কখনোই সাওম রাখতেন না।
হাদীসটি দ্বারা প্রমাণিত হয়, অর্ধ শাবানের পরও সাওম রাখা জায়েয আছে, তবে শর্ত হলো অর্ধ শাবনের পূর্বের ধারাবাহিকতা বা যোগসূত্রতা থাকতে হবে। ইমাম শাফে‘ঈ রহ. উল্লিখিত সব হাদীসের ওপরই আমল করেন।তিনি বলেন, অর্ধ শাবানের পর সাওম রাখা বৈধ হবে না, তবে যদি কারো সাওম রাখার অভ্যাস থাকে অথবা যোগসুত্র থাকে তাহলে তার বিষয়টি ব্যতিক্রম। তার জন্য তার অভ্যাস অনুযায়ী অথবা যোগসুত্রতা ধরে সাওম রাখা বৈধ। এ মতটি (হাদীসের মধ্যে নিষেধটি হারাম বর্ণনার নিষেধ) শাফে‘ঈদের অধিকাংশের মতে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য এবং বিশুদ্ধ মত।
আবার কারো মতে যেমন (রোইয়ানি রহ.) এখানে নিষেধটি হারামের জন্য নয়; বরং নিষেধটি মাকরুহের জন্য নির্ধারিত। (আল মাজমু-৬/৩৯৯-৪০০; ফতহুল বারী ৪/১২৯)
ইমাম নাওয়াবী এ অধ্যায়ের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন,
“জমহুর ওলামার মতে অর্ধ শাবানের পর সাওম রাখা নিষেধ হওয়া সর্ম্পকিত হাদীসগুলো দুর্বল। ফলে তারা বলেন অর্ধ শাবানের পর সাওম রাখা মাকরূহ নয়”। (রিয়াদুস-সালেহীনের পৃ: ৪১২)
হাফেযইবন হাজার রহ. বলেন,
“জমহুরে ওলামাদের মতে অর্ধ শাবানের পর নফল সাওম রাখা জায়েয আছে। আর নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত হাদীসগুলোকে তারা দুর্বল হাদীস বলে আখ্যায়িত করেন। আহমদ ইবন হাম্বলএবং ইবন মুঈন রহ. উভয়ে বলেন, এসব হাদীস মুনকার...। ফতহুল বারী হতে সংগৃহীত।
এ ছাড়া ইমাম বাইহাকী এবং ইমাম তাহাবী রহ.-ও হাদীসগুলোকে দুর্বল বলে সাব্যস্ত করেন।
আল্লামা ইবনে কুদামাহ রহ. বলেন, হাদীসটি সম্পর্কে ইমাম আহমাদ বলেন,
হাদীসটি সমালোচনা মুক্ত নয়। আমরা আব্দুর রহমান ইবন মাহদীর নিকট প্রশ্ন করলে তিনি হাদীসটিকে সহীহ আখ্যা দেননি এবং তার থেকে তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কোনোহাদীস বর্ণনা করেননি। আর ইমাম আহমদ বলেন, আলা রহ. একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী, তার থেকে বর্ণিত এ একটি হাদীসকেই প্রত্যাখান করা যেতে পারে।
আলা হলো আব্দুর রহমানের ছেলে, সে হাদীসটি তার পিতা থেকে এবং তার পিতা আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুথেকেহাদীসটি বর্ণনা করেন।
ইবনুল কাইয়্যেম রহ. তাহযীবুস-সুনান কিতাবে যারা হাদীসটিকে দুর্বল বলেছেন তাদের কথার উত্তর দিয়েছেন। তার উত্তরের সারাংশ নিম্নরুপ: মুলত: ইমাম মুসলিমের শর্তানুযায়ি হাদীসটি সহীহ। আলা রহ. বর্ণনাকারীর একা (তাফাররুদ) দ্বারা হাদীসটি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, তিনি একজন নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী।ইমাম মুসলিম তার মুসলিম শরীফে(আলা তার পিতা থেকে এবং তার পিতা আবুহুরায়রা থেকে) এ সনদে অনেক হাদীস বর্ণনা করেছেন। সুতরাং আলা রহ.-এর তাফাররুদ কোনো দোষনীয় বিষয় নয়।
এ ছাড়াও অনেক হাদীস এ রকম পাওয়া যায় যে, নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী এখানে একা। তা সত্ত্বেও উম্মত এ ধরনের হাদীসকে গ্রহণ করেছে এবং তদানুযায়ী আমল করে আসছেন। সুতরাংহাদীসটি অগ্রাহ্য হওয়ার মতো যৌক্তিক কোনো কারণ বিদ্যমান না থাকায় গ্রহণ করাই হলো ইনসাফ।
অতঃপর তিনি বলেন, তবে এ ক্ষেত্রে দুই ধরনের হাদীস পাওয়া যাওয়ায় দ্বন্ধের যে অবকাশ দেখা দিয়েছে মূলতএখানে কোনোদ্বন্ধই নেই। কারণ, যে সব হাদীসে সাওম রাখার কথা এসেছে -এসব হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যে ব্যাক্তি সাওম রাখতে অভ্যস্ত অথবা পূর্বের যোগসুত্র ধরে সাওম রাখেন তাকেই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তার জন্য অর্ধ শাবানের পরে এ ধরনের সাওম রাখাতে কোনো অসুবিধা নেই। আর আলা বর্ণনাকারীর হাদীসে যে নিষেধ পাওয়া যাচ্ছে, তা হলো ঐ ব্যাক্তির ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি নতুনভাবে সাওম রাখা আরম্ভ করে এবং তার পূর্ব সাওম রাখার কোনো যোগসুত্রও নাই।...
ইবন বায রহ.-কে অর্ধ শাবানের পর সাওম রাখা নিষেধ সম্বলিত হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, হাদীসটি সহীহ; যেমনটি আল্লামা নাসের উদ্দিন আল আলবানি বলেছেন। আর হাদীসের উদ্দেশ্য হলো অর্ধ শাবানের পর নতুনভাবে সাওম রাখতে আরম্ভ করা। তবে যদি কেউ অধিকাংশ মাস সাওম রাখে অথবা পুরো মাস সাওম রাখে সে অবশ্যই সুন্নাতের অনুসারী বলে গণ্য হবে। (মাজমুয়ায়ে ফাতওয়া শাইখ ইবন বায ১৫/৩৪৯)
শাইখ ইবনউসাইমীন রহ. রিয়াদুস-সালেহীন কিতাবের ব্যাখায় লিখেন, এমনকি যদি ধরে নেওয়া হয় যে,হাদীসটি সহীহ, তবে হাদীসের নিষেধটি হারামের জন্য নয়; বরং এখানে নিষেধটি শুধু মাকরূহ বুঝানোর জন্য, অধিকাংশ আহলে ইলম এ মতটিকেই গ্রহণ করেছেন। কিন্তু যদি কেউ সাওম রাখতে অভ্যস্ত তবে তার জন্য অর্ধ শাবানের পর সাওম রাখা মাকরূহ হবে না।
উত্তরের সারাংশ: মোটকথা শাবান মাসের দ্বিতীয়ার্ধে সাওম রাখা নিষেধ।
যদি কেউ সাওমপালন করে তবে তার সাওম হয়তো মাকরূহ হবে অথবা কারো মতে হারাম হবে। একমাত্র যে ব্যক্তি সাওম রাখতে পূর্ব থেকে অভ্যস্ত অথবা যার পূর্ব থেকে যোগসূত্র আছে,তার সাওম মাকরূহ বা হারাম হবে না। আল্লাহ-ই সর্বজ্ঞাত।
এখানে নিষেধের হিকমত হলো, লাগাতার সাওম রাখার দ্বারা হয়তবা রমযানের সাওম রাখতে দুর্বল হয়ে যাবে, ফলে তার রমযানের সাওম রাখা ব্যাহত হবে।
যদি বলা হয়, অনেক সময় এমন হয়, মাসের শুরুতে সাওম রাখার কারণে সে বেশি দুর্বল হয়ে যাবে তখন কি করা যাবে?
উত্তরে বলা হবে, যে ব্যাক্তি শুরু থেকে সাওম রাখে সে সাওম রাখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে ফলে তার জন্য সাওম রাখতে কষ্ট কম হবে।
মোল্লা আলী কারী রহ. বলেন, এখানে নিষেধটা মাকরূহে তানযিহী। এতেই উম্মতের জন্য অনুগ্রহ, যাতে সে রমযানের সাওম রাখতে দুর্বল হয়ে না যায় এবং স্বাচ্ছন্দেরমযানের সাওম রাখতে পারে। আর যে শাবানের পুরো সাওম রাখবে সে রমযানের সাওম রাখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে এবং তার থেকে কষ্ট দুর হয়ে যাবে। আল্লাহ-ই ভালো জানেন। সমাপ্ত |
|